জ্যৈষ্ঠের তীব্র গরমে এখন আক্ষরিক অর্থেই হাঁসফাঁস অবস্থা জনজীবনে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং এতে মানুষের ভোগান্তি সীমা ছাড়িয়েছে।

যশোরের মনিরামপুরে গত কয়েকদিন ৫-৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। মাঝে মাঝে আসছে বিদ্যাুৎ গরমের মধ্যে বিদ্যুতের এই আসা যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে ছোট বড়সহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, চলতি সপ্তাহে বৃষ্টির কোন সম্ভাবনা নেই ফলে গরম কমারও সম্ভাবনা নেই। এমন পরিস্থিতিতে কয়লা সংকটে দু-একদিনের মধ্যেই পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কয়লা আসতে কমপক্ষে ২৫ দিন সময় লাগবে ফলে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চলতি মাস প্রায় পুরো সময় বন্ধই থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে দেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে অর্থাৎ সামনের দিনগুলোতে লোডশেডিং নিয়ে কোনো সু-খবর দিতে পারছে না বিদ্যুৎ বিভাগ।

এ ব্যাপারে মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের সামনে চা ব্যবসায়ী শাকিল আহম্মেদ বলেন, আমি একজন চা ব্যবসায়ী এই চা বিক্রি করে আমার সংসার চলে। দোকানে সার্বক্ষণিক আগুনের পাশে থাকতে হয় যে গরম পড়েছে মানুষ দোকানে বসতে পারছে না একটু শীতল হাওয়া পেতে নির্জন স্থান খুঁজছেন তারা। এর মধ্যে চরম ভাবে হচ্ছে লোডশেডিং একদিকে মাটি ফাঁটা তাপ অন্যদিকে এই লোডশেডিংয়ে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। সারাদিন বিদ্যুৎ থাকছে মাত্র অল্প কিছুক্ষণ দুপুরে লাঞ্চ করে যে একটু বিশ্রাম নিবো তারও কোন কায়দা নাই বিদ্যুৎ এই আসে এই যায়। আবার রাতে যে ঘুমাবো সেটাও সম্ভব হয়না ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং।

মুূদি দোকানদার প্রতাপ কুন্ডু বলেন, দিনে আট-নয়বার বিদ্যুৎ যায় আর এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর আসে। এই তীব্র গরমে দোকানদারি করাও সম্ভব হচ্ছে। শরীর থেকে অঝরে ঘাম ঝরছে একটু নির্জন জায়গাতে গিয়ে যে বিশ্রাম নিবো সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। বাড়ির ছোট-ছোট বাচ্চাদের কষ্ট হচ্ছে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ছে তারা। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত শরীর ঠান্ডা করতে রাত জেগে ঘরের বাইরে বসে থাকি।

এদিকে গত শনিবার মনিরামপুর বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে লোকজনকে চার্জার ফ্যান কিনতে দেখা যাচ্ছে। তেমনি ভীড় জমতে দেখা যায় বিভিন্ন শরবতের দোকানে। লোডশেডিংয়ের কারণে জেনারেটর বেশি চালাতে হচ্ছে এ জন্য ডিজেলের বিক্রি বেড়েছে বলে জানান পেট্রোল পাম্প মালিকেরা।
এব্যাপারে যশোর বিদ্যুৎ সমিতি-২ মণিরামপুরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডলার সংকটে জ্বালানি আমাদানি কম, তাই বিদ্যুৎ উৎপাদনও কম হচ্ছে।
এদিকে কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।